Summary
সকল পদার্থ ক্ষুদ্র কণার দ্বারা গঠিত এবং এসব কণার মধ্যে আন্তঃকণা আকর্ষণ শক্তি ও গতিশক্তি উপস্থিত থাকে। এই দুই শক্তির ভিত্তিতে পদার্থের কঠিন, তরল এবং গ্যাসীয় অবস্থা বর্ণনা করা হয়, যা কণার গতিতত্ত্ব নামে পরিচিত।
- কঠিন অবস্থাঃ কণাগুলোর আন্তঃকণা আকর্ষণ শক্তি খুব বেশি হলে তারা কাছাকাছি অবস্থানে থাকে এবং নড়তে পারে না।
 - তরল অবস্থাঃ কঠিন পদার্থে তাপ দিলে কণাগুলো কাঁপতে শুরু করে, এবং যখন তাপ বাড়ে, তারা কিছুটা মুক্তি পেয়ে তরল অবস্থায় আসে। তরলে নির্দিষ্ট আয়তন কিন্তু নির্দিষ্ট আকার থাকে না।
 - গ্যাসীয় অবস্থাঃ তরলে আরও বেশি তাপ দিলে কণাগুলোর গতিশক্তি বৃদ্ধি পায়, ফলে তারা আন্তঃকণা আকর্ষণ শক্তি থেকে মুক্ত হয়ে ছড়িয়ে ছিটিয়ে চলে যায়। গ্যাসের নির্দিষ্ট আয়তন থাকে না এবং কণাগুলো যে পাত্রে রাখা হয় সেই আয়তনে ছোটাছুটি করে।
 
গ্যাসীয় অবস্থায় তাপ দেওয়া হলে কণাগুলোর গতিশক্তি আরও বাড়ে।
সকল পদার্থই ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র কণা দ্বারা গঠিত। এই কণাগুলো একে অপরকে আকর্ষণ করে যাকে আন্তঃকণা আকর্ষণ শক্তি বলা হয়। আবার কণাগুলোর গতিশক্তিও রয়েছে। আন্তঃকপা আকর্ষণ শক্তি এবং কণাগুলোর গতিশক্তি দিয়ে পদার্থের কঠিন, তরল ও গ্যাসীয় অবস্থা ব্যাখ্যা করার তত্ত্বকেই কণার গতিতত্ত্ব বলা হয়। যখন কণাগুলোর ভেতরকার আকর্ষণ শক্তি বা অন্তঃকণা আকর্ষণ শক্তি খুব বেশি থাকে তখন কণাগুলো খুব কাছাকাছি অবস্থান করে এবং নিজেদের অবস্থান থেকে নড়তে পারে না। এই অবস্থা হচ্ছে কঠিন অবস্থা। কঠিন পদার্থকে তাপ দেওয়া হলে কণাগুলো তাপশক্তি গ্রহণ করে কাঁপতে থাকে। যদি আরও বেশি তাপ দেওয়া হয় তাহলে কণাগুলো এত বেশি কাঁপতে থাকে যে আন্তঃকণা আকর্ষণ শক্তি কমে যায় এবং কিছুটা গতিশক্তি প্রাপ্ত হয়। পদার্থের এই অবস্থাকে তরল অবস্থা বলে। তরলের নির্দিষ্ট আয়তন থাকলেও নির্দিষ্ট আকার থাকে না। তরল অবস্থার পদার্থকে আরো বেশি তাপ দেওয়া হলে কণাগুলো তাপশক্তি নিয়ে গতিশক্তি বৃদ্ধি করতে থাকে এবং একসময় গতিশক্তি এত বেড়ে যায় যে কণাগুলো আন্তঃকণা আকর্ষণ শক্তি থেকে প্রায় মুক্ত হয়ে বিক্ষিপ্তভাবে ছুটতে থাকে। এই অবস্থাকে বলে গ্যাসীয় অবস্থা। গ্যাসীয় অবস্থায় পদার্থের আর কোনো নির্দিষ্ট আয়তন থাকে না। তাকে যে আয়তনের পাত্রে রাখা হবে কণাগুলো সেই আয়তনেই ছোটাছুটি করতে পারবে। গ্যাসীয় অবস্থায় পৌঁছানোর পর যদি আরও তাপ দেওয়া হয় তখন কণাগুলো আরও জোরে ছুটতে থাকবে অর্থাৎ পতিশক্তি আরও বেড়ে যাবে।